অর্ধেক সন্তুষ্টি, অর্ধেক অসন্তুষ্টি—জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে সরকারের প্রতি নুরের প্রতিক্রিয়া

অর্ধেক সন্তুষ্টি, অর্ধেক অসন্তুষ্টি—জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে সরকারের প্রতি নুরের প্রতিক্রিয়া

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর অভিযোগ করেছেন, সরকার জুলাই ঘোষণাপত্রে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেছেন, ঢাকঢোল পিটিয়ে জাতির সামনে একটি ঘোষণাপত্র হাজির করা হলেও সেটার ভেতরেও রয়েছে “শুভঙ্করের ফাঁকি”।

বুধবার (৬ আগস্ট) রাজধানীর পুরানা পল্টনের আলরাজি কমপ্লেক্সে গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

সরকারকে অর্ধেক ধন্যবাদ

নুর বলেন, “৫ আগস্ট বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন ছিল। সেই দিনে জুলাই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে আরেকটি ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য সরকার ও সরকারের প্রধানকে ধন্যবাদ জানাতে হয়। তবে আমরা পুরোপুরি সন্তুষ্ট নই। তাই অর্ধেক সন্তুষ্টি আর অর্ধেক অসন্তুষ্টি নিয়ে সরকারকে ধন্যবাদ জানাতে হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “এই অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা মানেই আমাদের সবার ব্যর্থতা। তাই সরকারকে আমরা ধারণ করেছি, কিন্তু সরকার আমাদের ধারণ করেনি। বরং কেবল এনসিপিকে (জাতীয় নাগরিক পার্টি) ধারণ করেছে।”

ঘটনার পেছনে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ

নুর অভিযোগ করে বলেন, “ঐতিহাসিক জুলাই ঘোষণাপত্রে ইতিহাসকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এই ঘোষণাপত্রের প্রেক্ষাপটে ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন ছিল মূল বিষয়। অথচ সেটিকে গৌণ করে তুলে ধরা হয়েছে। সেই আন্দোলন থেকেই নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, ছাত্র-যুব-শ্রমিক অধিকার পরিষদ, গণঅধিকার পরিষদের উত্থান ঘটে। ২০২৪ সালের আন্দোলন পর্যন্ত তার ধারাবাহিকতা রয়েছে।”

তিনি বলেন, “কিন্তু সরকার এই ধারাবাহিক সংগ্রামের ইতিহাস বাদ দিয়ে মিথ্যা ভিত্তির ওপর ঘোষণা দিয়েছে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করবে। ঠিক যেভাবে ৭১-এর ইতিহাস নিয়ে বিকৃত তথ্য শিখানো হয়েছে।”

রাশেদ খাঁনের লিখিত বক্তব্য

সংবাদ সম্মেলনে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান লিখিত বক্তব্যে বলেন, “জুলাই ঘোষণাপত্রের ১৬ নম্বর দফায় বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটাব্যবস্থার বিলোপ ও দুর্নীতি প্রতিরোধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আন্দোলন শুরু হয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আন্দোলন শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে। দুর্নীতি নয়, বরং কোটা সংস্কারই ছিল আন্দোলনের মূল দাবিপত্র।”

তিনি আরও বলেন, “২০১৮ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত আমাদের ধারাবাহিক আন্দোলন এবং লড়াইয়ের ইতিহাস পরিকল্পিতভাবে উপেক্ষা করে ঘোষণাপত্র তৈরি করা হয়েছে। এটি বড় ধরনের ইতিহাস বিকৃতি, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ভুল শেখাবে।”

Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus (0 )