ঐকমত্য কমিশনের সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা

ঐকমত্য কমিশনের সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা

ঐকমত্য কমিশন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে ২৩ দিন ধরে চলা আলোচনা অবশেষে শেষ হয়েছে। কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, এই আলোচনায় ১৯টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যদিও কিছু ক্ষেত্রে ভিন্নমতও (নোট অব ডিসেন্ট) রয়েছে।
আলোচনার মূল বিষয়বস্তু
প্রাথমিকভাবে কমিশন ১৬৬টি সুপারিশ নিয়ে কাজ শুরু করেছিল। পরে, দলগুলোর সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার পর ১৯টি মূল সংস্কারের বিষয় চূড়ান্ত করা হয়। এই বিষয়গুলো হলো:
* সংবিধানের গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদ: সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমা সংক্রান্ত বিধান।
* নির্বাচন ও প্রতিনিধিত্ব: নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ, নির্বাচন কমিশন গঠন এবং সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব।
* রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান: প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকার বিধান, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল, বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ, সরকারি কর্মকমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন্যায়পাল নিয়োগের পদ্ধতি।
* আইনসভা ও সরকার ব্যবস্থা: দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিত্ব, সংবিধান সংশোধন পদ্ধতি এবং জরুরি অবস্থা ঘোষণা।
* রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও ক্ষমতা: রাষ্ট্রপতির নির্বাচন পদ্ধতি, ইলেক্টোরাল কলেজ এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব।
* অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব: তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং নাগরিকের মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি।

ভিন্নমতের ক্ষেত্রসমূহ
অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, কিছু বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য দেখা গেছে। যেমন:
* সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ: অর্থবিল ও আস্থা ভোটের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়ে বিএনপি ভিন্নমত দিয়েছে।
* বিচার বিভাগ: বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ বিষয়ে বিএনপি উচ্চ আদালতের সঙ্গে আলোচনা অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছে।
* প্রধানমন্ত্রীর পদ: প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকা নিয়ে বিএনপি ও আরও কয়েকটি দল ভিন্নমত পোষণ করেছে।
ড. আলী রীয়াজ আরও জানান, আলোচনা শেষে জাতীয় সনদের একটি পূর্ণাঙ্গ রূপ তৈরি করা হবে এবং তা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হবে। এই আলোচনার মধ্য দিয়ে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে কাজ শেষ করার যে লক্ষ্য ছিল, তা সফল হয়েছে।

এমএম

Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus ( )